সর্বত্রে একটাই প্রশ্ন, তা হলো- কখন খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান?
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
রাস্তা-ঘাটে কিংবা বাজার-হাটে, সর্বত্রে একটাই প্রশ্ন, তা হলো- কখন খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান? কারণ মন্ত্রীমশাই নিজেই স্কুল-কলেজ খোলা নিয়ে দুই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। গত ২৭ মে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দিপু মণি সাংবাদিকদের বলেছেন, এ কথা নির্দ্বিধায় বলতে পারেন ১৩ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে। অর্থাৎ খুলে দেয়া হবে স্কুল-কলেজ। সবার আগ্রহের দিক বিবেচনা করেই শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের ফোকাসই ছিল ১৩ই জুন সবার অপেক্ষার অবসান ঘটবে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে তিনি নিজেই আবার বলেছেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে আমরা আগে অগ্রাধিকার দেবো। অর্থাৎ এক্ষুণি খুলছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মন্ত্রী মশাইয়ের সুরে সুর মিলিয়ে গতকাল জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ঈঙ্গিত দিয়েছেন ১৩ই জুন স্কুল-কলেজ আপাতত খুলছে না। সরকারের মন্ত্রীদের এমন বিপরীত বক্তব্যে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
কারণ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনও সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ১৩ই জুন দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেয়ার প্রক্রিয়া তারা শুরু করেছেন। এর ঠিক একদিন পর ২৮ মে শিক্ষা অধিদফতর থেকে স্কুল কলেজ খোলার প্রস্তুতি নিতে সব জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারকেও নির্দেশনাও দেয়া হয়। এরপর ২৯ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী তার একদিন আগের বক্তব্য থেকে সরে এসে বলেন, করোনার সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে না এলে স্কুল-কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত আমরা নিতে পারছি না। কেননা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকেই আমরা আগে অগ্রাধিকার দেবো।
প্রতিবারই ছুটি বাড়ানোর পরপরই জানানো হয় এবারের ছুটি শেষ হওয়ার পরই খুলে দেয়া হবে স্কুল-কলেজ। ফলে ক্লাসে ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু পরে জানানো হয় ছুটি আবারও বর্ধিত করা হয়েছে।
অনেকে অভিভাবক জানিেয়েছেন, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় তাদের সন্তানদের শিক্ষাজীবন নিয়ে তারা রীতিমতো হতাশায় ভুগছেন। কেননা পড়াশোনার বাইরে থাকায় অনেক শিক্ষার্থী বিপথগামী হচ্ছে। প্রাণ বিধ্বংশী বিভিন্ন গেইমসে ঝুঁকছে তারা, দীর্ঘ দেড় বছর ধরে স্কুলের শৃঙ্খলার বাইরে থাকায় তাদের মা-বাবা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। তাই যখনই স্কুল-কলেজ খোলার কোনো ঘোষণা তারা জানতে পারেন তখন আগ্রহ ও আশায় বুক বাঁধেন। কিন্তু পরে যখন আবার শুনতে পান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার সংবাদ,তখন আশাহত হন। অন্য দিকে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার হারও ক্রমেই বাড়ছে। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ব্যানারেও প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানানো হচ্ছে। এমনকি প্রতিষ্ঠান না খুললে রাজপথে আন্দোলনেরও হুমকি দেয়া হচ্ছে।
এ দিকে শিক্ষকদের মধ্যেও প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে। অবিলম্বে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, সরকার মূলত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে দমিয়ে রাখতেই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রেখেছে। তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখায় সরকারের সমালোচনা করে বলেন, গার্মেন্টস, শপিংমল, গণপরিবহন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সবই চালু রাখা হয়েছ। আয়োজন-উৎসব সবই হচ্ছে। শুধু বন্ধ রয়েছে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও বলা হয় শিক্ষা হচ্ছে জাতির মেরুদন্ড। কিন্তু এই সরকারের কাছে শাসন হচ্ছে জাতির মেরুদন্ড। গতকাল দুপুরে ‘হল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দাও আন্দোলন’ আয়োজিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনুষ্ঠিত এক ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
এরা চাই জাতি মেরুদন্ড হীন হয়ে পড়ুক
উত্তরমুছুনএরা চাই জাতি মেরুদন্ড হীন হয়ে পড়ুক
উত্তরমুছুন