এরদোয়ান কি পারবেন পূর্বসুরির স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে?
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
দীর্ঘ ১০বছর ধরে নানা ধরণের জরিপ চালানোর পর অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণে কাজ শুরু করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। তিনি গত ২৬ জুন ২০২১ শনিবার দেশটির বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুলের ইউরোপীয় অংশকে দুই ভাগ করে একটি খাল খনন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এর লক্ষ্য হচ্ছে কৃষ্ণ সাগর এবং মারমার ও ভূমধ্যসাগরের মধ্যে সংযোগ তৈরি করা। বিশ্বজুড়ে এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কারণ এটি সুলতান সুলেমানের স্বপ্ন ছিলো।
সুয়েজ বা পানামা খালের আদলে কৃত্রিমভাবে খনন করা এই ‘ক্যানাল ইস্তাম্বুল’ বা ইস্তাম্বুল খালের লক্ষ্য হচ্ছে- বসফরাস প্রণালীর বিকল্প পথ তৈরি করে ওই দুই সাগরের মধ্যে আরও বেশি সংখ্যক জাহাজ চলাচলের পথ সুগম করা। যদিও তুরস্কের অনেকে এই খাল খনন প্রকল্পের বিরোধিতা করেছেন।
প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলছেন, এই খাল তুরস্কের উন্নয়নে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। প্রকল্পটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, বসফরাস প্রণালী দিয়ে ১৯৩০-এর দশকে প্রতি বছর ৩ হাজার জাহাজ পারাপার হতো, আর এখন প্রতি বছর ৪৫ হাজার জাহাজ এই প্রণালী অতিক্রম করে।
এই শতকের মাঝামাঝি নাগাদ অর্থাৎ ২০৫০ সালের দিকে এই সংখ্যা ৭৮ হাজারে দাঁড়াবে বলে তিনি জানান। এতো বিপুল সংখ্যক জাহাজের চলাচল ইস্তাম্বুল শহরের জন্য চরম ঝুঁকি তৈরি করবে বলে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
তবে শুধু খাল খননই নয়, বরং কথা রয়েছে যে এই প্রকল্পের আওতায় তৈরি হবে নতুন একটি আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর, কন্টেইনার টার্মিনাল, কিছু কৃত্রিম দ্বীপ এবং খালের দুই পাশ বরাবর বেশ কয়েকটি আধুনিক শহর। এরদোয়ানের নেতৃত্বাধীন এ কে পার্টি ক্ষমতায় বসার পর ২০১১ সালে এক জনসভায় তিনি এই খাল খনন করার ঘোষণা করেছিলেন।
সে সময় অনেকেই একে ‘রাজনীতির চমক’ বলে অভিহিত করলেও এরদোগানের সরকার ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই খাল খননের সম্ভাব্যতা নিয়ে নানা রকম সমীক্ষা চালায়। তবে বসফরাসের বিকল্প একটি খাল খনন নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছিল বেশ আগে - সেই ওসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান সুলেমান দ্য ম্যাগনিফিসেন্টের আমলে।
তুর্কি পত্রিকা হুরিয়াতের খবর অনুযায়ী, সুলতান সুলেমানের স্থপতি মিমার সিনান এই পরিকল্পনাটি তৈরি করলেও অজ্ঞাত কারণে তা বাতিল করা হয়। এরপর সুলতান তৃতীয় মুরাদের আমলে ১৬৯১ সালের ৬ মার্চ এই খাল খননের জন্য একটি রাজকীয় ফরমান জারি করা হয়, কিন্তু সেটিও পরে বাতিল হয়ে যায়। এভাবে মোট সাতবার খাল খননের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা কখনোই বাস্তবে পরিণত হয়নি। তাই বিশ্ববাসীরও অবাক প্রশ্ন, এরদোয়ান কি পারবেন পূর্বসুরির স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে?
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন